ফুসফুস ভালো রাখার ১৫টি উপায় সম্পর্কে জেনে নিন


 হ্যালো সবাইকে সুমা হেলথ কেয়ার এ স্বাগতম!আশা করছি আপনারা সবাই ভালো আছেন।আজকে নতুন একটি হেলথ কেয়ার নিয়ে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, এতে করে ইনশাআল্লাহ আপনারা আরও বেশি ভালো থাকবেন। আজকের এই স্পেশাল হেলথ কেয়ার এর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ফুসফুস ভালো রাখার ১৫টি উপায় সম্পর্কে জানতে যে বা যারা দেখতে এসেছেন তাদের সবাইকে জানাই আসসালামু আলাইকুম।

ফুসফুস ভালো রাখার ১৫টি উপায়

শিরোনাম:ফুসফুস ভালো রাখার ১৫টি উপায়।

ফুসফুস ভালো রাখতে গেলে আমাদের প্রতিদিনের জীবনে কিছু নিয়ম-কানুন  মেনে চলতে হবে। আর এই নিয়ম-কানুন গুলো সঠিক উপায়ে করলে আমাদের ফুসফুস ভালো থাকতে পারে।শীতকালে বেশিরভাগ মানুষের শ্বাস নিতে সমস্যা দেখা দেয়।যার ফলে যাদের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল তারা ঘনঘন অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন।এইজন্য আমাদের প্রতিনিয়ত মনে রাখতে হবে শ্বাসতন্ত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো ফুসফুস।আর আমাদের এই ফুসফুসকে ভালো রাখতে নিম্নোক্ত ১৫ টি উপায় সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন। 

আমাদের ফুসফুস ভালো রাখার ১৫টি উপায় হলো-

1.ফুসফুসকে ভালো রাখতে নাকের মাধ্যমে আমাদের শ্বাস নেয়া জরুরি :

আমাদের ফুসফুসে ঠান্ডা বাতাসের প্রবেশ যাতে না করতে পারে তার জন্য আমাদের নাক দিয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস নেয়া ভালো।কারণ নাকের মাধ্যমে আমরা শ্বাসগ্রহণ করলে বাতাস গরমভাব হতে বেশি সময় লাগে।ফলে ফুসফুস গরম বাতাস পেলে আমাদের অসুস্থতার প্রবণতা অনেকটা কমে আসতে পারে। 

2.ফুসফুসকে ভালো রাখতে আমাদের স্কার্ফ/ফেসমাস্ক পরা দরকার:

ঠান্ডা আবহাওয়া আমাদের শ্বাসতন্ত্রকে বিশৃঙ্খল  করতে পারে।এজন্য আমাদের ফুসফুসকে সুরক্ষিত রাখতে মুখের মধ্যে স্কার্ফ দিয়ে ঢেকে রাখা ভালো। অথবা আমরা ফেসমাস্ক পড়তে পারি।তখন স্কার্ফ/ফেসমাস্ক আমাদের ফুসফুসের ওপর ঠান্ডা বাতাসের প্রতিক্রিয়া অনেকটা কমিয়ে ফেলতে সাহায্য করতে পারে। 

3.আমাদের ফুসফুসকে ভালো রাখতে জীবনযাপনে সচেতন হওয়া জরুরি :

ঠান্ডা বাতাস আমাদের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে দুর্বল করে ফেলে। ঠান্ডা বাতাস আমাদের নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস ও ফ্লুর ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।শীতে ফুসফুসের সুরক্ষায় জীবনযাপনে সচেতনতা বাড়াতে আমরা এগুলো করতে  পারি, যেমন- শীতের পোশাক পরা, ফেসমাস্ক ব্যবহার করা,শ্বাসতন্ত্রীয় সংক্রমণের  ফ্লু আছে এমন লোক থেকে দূরে থাকা জরুরি।

4. ফুসফুসকে ভালো রাখতে বাইরের শরীরচর্চা থেকে আমাদের  বিরত থাকা জরুরি :

তীব্র শীতে বাইরে শরীরচর্চা করলে আমাদের  উপকারের তুলনায় ক্ষতিই বেশি হতে পারে।আর এই ঠান্ডা বাতাস আমাদের ফুসফুসে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। ঠান্ডা বাতাস আমাদের শরীরের উষ্ণতা কমিয়ে হাইপোথার্মিয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। ঠান্ডায় রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে, যার ফলে আমাদের হৃদপিন্ড ও রক্তনালি সংক্রান্ত রোগ দেখা দিতে পারে।তাই আমাদের ফুসফুসকে ভালো রাখতে বাইরে শরীরচর্চা থেকে বিরত থাকা জরুরি। 

5.ফুসফুসকে ভালো রাখতে বায়ুদূষণ থেকে নিজেকে রক্ষা করা জরুরি :

বায়ুদূষণে আমাদের শ্বাসতন্ত্রীয় রোগের আরো অবনতি হতে পারে। ফুসফুসে বায়ুদূষণের প্রভাব এড়াতে আমাদেরকে এন্টি-পলুশন মাস্ক পরা ভালো।

6.ফুসফুসকে ভালো রাখতে আমাদের কাজু, পেস্তা, চিনাবাদাম ও মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়া দরকার :

কাজু, পেস্তা, চিনাবাদামসহ মিষ্টি কুমড়ার বীজ ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘ই’ রয়েছে। সেই-সঙ্গে খনিজ লবণ ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। এসব খাবার আমাদের ফুসফুসে অক্সিজেন সরবরাহ এবং প্রদাহজনিত সমস্যা রোধ করতে সাহায্য করে।

7.ফুসফুসকে ভালো রাখতে আমাদের মধু খাওয়ার গুরুত্ব :

মধুতে অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল ও প্রদাহনাশক ক্ষমতা রয়েছে, যা আমাদের ফুসফুসকে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন আমাদের এক চা চামচ মধু খেলে তা হবে আমাদের ফুসফুসের জন্য উপকারী।

8. ফুসফুসকে ভালো রাখতে আমরা ভিটামিন -ডি সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারি :

ভিটামিন-ডি সমৃদ্ধ খাবার আমাদের ফুসফুসের প্রদাহজনিত সমস্যা রোধ করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে ভিটামিন ডি’র অভাবে শিশুদের শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।ভিটামিন ডি’র মূল উৎস সূর্য। এ ছাড়া দুধ, ডিম, দই, মাছ, মাংস ইত্যাদি খাবারে প্রচুর ভিটামিন ‘ডি’ রয়েছে।

9.ফুসফুসকে ভালো রাখতে তুলসীপাতা খাওয়ার উপকারিতা :

তুলসী পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। আর এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ফুসফুস সুরক্ষায় খুবই কার্যকরী হতে পারে। বাতাসে থাকা ধূলিকণা শোষণ করতে পারে তুলসী পাতা। তাই শ্বাসযন্ত্রের দূষিত পদার্থ দূর করতে তুলসীপাতার রস কিংবা এই পাতা পানিতে ফুটিয়ে পান করুন। ফুসফুস ভালো থাকতে এটি সাহায্য করতে পারে। 

10.ফুসফুসকে ভালো রাখতে কালোজিরা খেতে পারেন :

ফুসফুস ভালো রাখতে কালোজিরা অনেক ভালো কাজ করতে পারে। এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শ্বাসনালির প্রদাহ রোধ করতে সাহায্য করতে পারে।প্রতিদিন আধা চা চামচ কালোজিরার গুঁড়া এক চা চামচ মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে ফুসফুস ভালো থাকতে পারে। 

11. ফুসফুসকে ভালো রাখতে ভিটামিন -সি সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারেন :

ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ খাবার ফুসফুসকে ভালো রাখতে সাহায্য করতে পারে।ফুসফুসের প্রদাহজনিত সমস্যা রোধ করে এই ভিটামিন। শ্বাসযন্ত্রে অক্সিজেন সরবরাহ করতে সাহায্য করে এবং শ্বাসনালির জীবাণু ধ্বংস করতে সাহায্য করতে পারে। লেবু, আমলকি, কমলা, আপেল, পেয়ারা ইত্যাদি খাবারে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে। 

12.ফুসফুসকে ভালো রাখতে রসুন খেতে পারেন :

রসুনে রয়েছে প্রচুর সেলিনিয়াম ও অ্যালিসিন। এ দুটি প্রাকৃতিক উপাদান ফুসফুস ও শ্বাসনালি ভালো রাখতে সাহায্য করে।এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে ভাইরাসজনিত সংক্রমণ রোধে রসুনের ব্যবহার কাজে আসতে পারে।

13.ফুসফুসকে ভালো রাখতে ব্যায়ামের গুরুত্ব  :

শারীরিক ব্যায়াম আমাদের ফুসফুসকে ভালো রাখতে সাহায্য করে।এছাড়া এটি আমাদের শরীর সুস্থ রাখার পাশাপাশি ফুসফুসকে ভালো রাখতে সাহায্য করে।এ জন্য এরোবিক্স, ইয়োগা বা কার্ডিও এক্সারসাইজ প্রতিদিন চর্চা করা ভালো।

14. ফুসফুসকে ভালো রাখতে গ্রিন-টি খাওয়ার উপকারিতা :

গ্রিন-টি বা চায়ে ফ্ল্যাবিনয়েড নামের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা আমাদের ফুসফুসের কাজ পরিচালনায় সহায়তা করতে পারে।সেই সঙ্গে ফুসফুস থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে।

15.ফুসফুসকে ভালো রাখতে হলুদের উপকারিতা :

আমরাজানি,হলুদের  অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট  ফুসফুসকে দূষিত পদার্থের প্রভাব থেকে সুরক্ষা করতে সাহায্য করে।আমাদের সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট হলে কাঁচা হলুদের রস মাখন বা ঘির সঙ্গে মিশিয়ে খেলে ভালো কাজ করতে পারে।


ফুসফুস ভালো রাখার ১৫টি উপায়ের শেষ কথা :

উপরিউক্ত ধাপগুলি অনুসরণ করে আপনারা আপনাদের ফুসফুসকে ভালো রাখতে পারেন ইনশাআল্লাহ। 

বিশেষ একটি নোট :(আমি একজন বিশেষজ্ঞ নই তবে আপনারা এগুলো অনুসরণ করে ফুসফুসের সাময়িক সমস্যার সমাধান নিতে পারেন ও আপনাদের ফুসফুসের সিরিয়াস কোনো কিছু হলে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন) 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

শিক্ষামূলক ব্লগ বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url