কৃমি রোগ থেকে মুক্তি পেতে ঘরোয়া ১৫টি খাবারের নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন
হ্যালো সবাইকে সুমা হেলথ কেয়ার এ স্বাগতম!আশা করছি আপনারা সবাই ভালো আছেন ইনশাআল্লাহ আজকের এই নতুন কৃমি রোগ থেকে মুক্তি পেতে ঘরোয়া ১৫টি খাবারের নিয়ম সম্পর্কে জেনে আপনারা আরও বেশি ভালো থাকবেন। আজকের এই স্পেশাল হেলথ কেয়ার এর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কৃমি রোগ থেকে মুক্তি পেতে ঘরোয়া ১৫টি খাবারের নিয়ম সম্পর্কে জানতে যে বা যারা দেখতে এসেছেন তাদের সবাইকে জানাই আসসালামু আলাইকুম।
![]() |
কৃমি রোগ থেকে মুক্তি পেতে ঘরোয়া ১৫টি খাবারের নিয়ম |
শিরোনাম : কৃমি রোগ থেকে মুক্তি পেতে ঘরোয়া ১৫টি খাবারের নিয়ম ।
আমরা জানি, কৃমি আকারে খুবই ছোট হয়। প্রায় দেখাই যায় না। কিন্তু জেনে অবাক হবেন, এ রকম একটি কৃমি মানুষের অন্ত্র থেকে দিনে শূন্য দশমিক ২ মিলিলিটার রক্ত শুষে নেয়। অনেক কৃমি শরীরে থাকলে প্রতিদিনই আমাদের বেশ কিছু পরিমাণ রক্ত হারিয়ে যায়।ফলে আমরা শিশুরা অপুষ্টি ও রক্তশূন্যতায় ভোগে থাকি।বড়রাও কম ভোগেন না।এছাড়া কৃমির কারণে অ্যালার্জি, ত্বকে চুলকানি, শুকনো কাশি, শ্বাসকষ্ট হতে পারে। কখনো অন্ত্রের বা পিত্তথলির নালিতে কৃমি আটকে গিয়ে বড় ধরনের জটিলতা হয়।তাই আমরা সাধারণত বলে থাকি কৃমি সংক্রমণ বড় এক ধরনের স্বাস্থ্যসমস্যা।
এছাড়া আমাদের কৃমির সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় খোঁজার আগে নিশ্চিত হওয়া জরুরি যে সমস্যাটি আসলেই কৃমির কারণ কি না।কারণ পেটে ব্যথার আমাদের আরও অনেক কারণও থাকতে পারে। আপনি বা আপনারা আসলেই কৃমির কারণে সমস্যায় ভুগছেন কি না তা বোঝার জন্য এই লক্ষণগুলোর সাথে তুলনা করে নিতে পারেন -
- সব সময়ে গ্যাস অথবা পেট ফেঁপে থাকা,
- ক্ষুধা না পাওয়া,
- দুর্বলতা,
- সব সময় কাশি হওয়া,
- হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া,
- ডায়েরিয়া এবং বমি হওয়া,
- তলপেটে ব্যথা,
- সব সময় ক্লান্ত লাগা,
- পায়খানার রাস্তায় চুলকানো,
- ঘুম থেকে উঠার পর মুখ দিয়ে হালকা গরম জল পড়তে দেখলে।
উপরিউক্ত লক্ষণগুলো দেখা দিলে আপনি আপনার কৃমি রোগটি সম্পর্কে কিছুটা আন্দাজ করে নিতে পারেন ও নিজের ঘরোয়া ১৫টি খাবার কৃমি রোগ থেকে রক্ষা পেতে খেতে পারেন-
1.কৃমি রোগ থেকে রক্ষা পেতে কাঁচা পেঁপে খাওয়ার নিয়ম :
আপনারা প্রতিদিন সকালে এক টেবিল চামচ কাঁচা পেঁপের রসের সঙ্গে তিন বা চার টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিন। সকালে খালি পেটে পান করুন। দুই থেকে তিন দিন পান করুন। তাতে কৃমির সমস্যা কমতে পারে।
2.কৃমি রোগ থেকে রক্ষা পেতে নিম পাতার রস খাওয়ার নিয়ম :
নিমপাতা রস আমাদের কৃমি দূর করতে সাহায্য করতে পারে।এজন্য আপনাদের সকালে খালি পেটে হালকা গরম পানি আধা চা চামচ নিমপাতা বাটা মিশিয়ে পান করুন।এভাবে আপনারা নিয়মিত খেলে কৃমির সমস্যা থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে পারেন।
3.কৃমি রোগ থেকে রক্ষা পেতে নিম পাতার বড়ি খাওয়ার নিয়ম :
আপনারা বছরের শুরুতেই কাচা নিম পাতা থেকে নিম পাতার বড়ি বানিয়ে শুকিয়ে একটি কাচের জারে সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন।পরে সেই বড়িগুলো থেকে ১টা করে নিম পাতার বড়ি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পানি দিয়ে ট্যাবলেট এর মতো খেতে পারেন। ইনশাআল্লাহ আপনার কৃমি এভাবে আস্তে আস্তে খেতে থাকলে কমতে পারে।
4.কৃমি রোগ থেকে রক্ষা পেতে করলার জুস খাওয়ার নিয়ম:
আপনারা কৃমি রোগ থেকে রেহাই পেতে প্রতিদিন খালি পেটে এক গ্লাস করে করলার জুসে একটু চিনি মিশিয়ে খেয়ে নিতে পারেন, এতে আপনার মধ্য থেকে চোষক কৃমি ধীরে ধীরে চলে যেতে পারে।
5.কৃমি রোগ থেকে রক্ষা পেতে মধু খাওয়ার নিয়ম:
আপনারা কৃমি রোগ থেকে রেহাই পেতে হলে মধুর সাথে অরলর পাতার রস প্রতিদিন সকালে মিশিয়ে খেতে পারেন ইনশাআল্লাহ কৃমি রোগের ক্ষেএে আপনারা ভালো ফলাফল পেতে পারেন।
6.কৃমি রোগ থেকে রক্ষা পেতে আদা খাওয়ার নিয়ম:
আপনারা কৃমি রোগের ক্ষতি থেকে মুক্তি পেতে যখনই সুযোগ পাবেন ঝাঝালো আদাকে ছেঁচে নিয়ে এর থেকে রস বের করে নিয়ে খেতে পারেন। এতে করে ধীরে ধীরে আপনার কৃমি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
7.কৃমি রোগ থেকে রক্ষা পেতে আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার নিয়ম:
আপনারা ভারী খাবার খাওয়ার আধ ঘণ্টা আগে অ্যাপল সিডার ভিনিগার খেলে তা আপনার পেটে অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। তাতে আপনার শরীরের প্যারাসাইট ও জীবাণুর কৃমির লার্ভা মরে যেতে সাহায্য করে।
8.কৃমি রোগ থেকে রক্ষা পেতে রসুন খাওয়ার নিয়ম:
রসুন অ্যান্টি-প্যারাসাইটিক খাবার যা আপনার কৃমি দূর করতে সাহায্য করে। তাছাড়া কাঁচা রসুনের অ্যামাইনো অ্যাসিড রয়েছে যা আমাদের পেটের কৃমি মেরে ফেলতে সাহায্য করে। আপনারা প্রতি দিন সকালে খালি পেটে দু’কোয়া রসুন খান। এক সপ্তাহ নিয়মিত খান। আধ কাপ জলে দু’টি রসুনের কোয়া দিয়ে সিদ্ধ করে এক সপ্তাহ নিয়মিত খেলে এতে আপনারা কৃমির জন্য উপকার পেতে পারেন।
9.কৃমি রোগ থেকে রক্ষা পেতে নারকেল খাওয়ার নিয়ম:
আমাদের কৃমি দূর করতে নারকেল বেশ কার্যকরী উপাদান হিসেবে কাজ করে।আপনারা প্রতি দিন সকালে এক টেবল-চামচ নারকেল কুচি খান। ৩ ঘণ্টা পর এক গ্লাস গরম দুধের সঙ্গে দুই টেবল-চামচ ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে খান।তবে শিশুদের এটি খাওয়াবেন না।
10.কৃমি রোগ থেকে রক্ষা পেতে আনারস খাওয়ার নিয়ম:
আনারসের মধ্যে রয়েছে ব্রোমেলিন এনজাইম। যা প্যারাসাইট মারতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে টানা তিন-চার দিন যদি আপনারা শুধু আনারস খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার কৃমি সম্পূর্ণ সারানো যেতে পারে।
11.কৃমি রোগ থেকে রক্ষা পেতে হলুূদ খাওয়ার নিয়ম:
আপনারা কয়েকদিন এক চা চামচ কাঁচা হলুদের রসের সঙ্গে সামান্য নুন মিশিয়ে নিন এবং তারপর এটি প্রতি দিন সকালে খালি পেটে খান। এ ছাড়া হাফ কাপ গরম জলে, সামান্য হলুদ গুঁড়ো এবং নুন মিশিয়ে খান। পাঁচ দিন নিয়মিত খেলে উপকার পেতে পারেন কৃমি রোগের ক্ষতি থেকে ইনশাআল্লাহ।
12.কৃমি রোগ থেকে রক্ষা পেতে কুমড়োর বীজ খাওয়ার নিয়ম:
আপনারা কৃমি রোগের ক্ষতি থেকে মুক্তি পেতে দুই টেবল-চামচ মিষ্টি কুমড়োর বীজের গুঁড়ো তিন কাপ জলে আধ ঘণ্টা সিদ্ধ করে নিন। এরপর আপনারা সকালে খালি পেটে এক সপ্তাহ খান। এ ছাড়া এক টেবল-চামচ মিষ্টি কুমড়োর বীজের গুঁড়োর সঙ্গে সমপরিমাণ মধু মিশিয়েও খেতে পারেন।
13.কৃমি রোগ থেকে রক্ষা পেতে লবঙ্গ খাওয়ার নিয়ম:
আপনারা কৃমি রোগের অবসান ঘটাতে প্রতি দিন ১-২টি লবঙ্গ খেতে পারেন। কারণ এটির মধ্যে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদান কৃমিকে নষ্ট করে দিতে সাহায্য করতে পারে। তাই প্রতিদিন লবঙ্গ খেতে পারেন।
14.কৃমি রোগ থেকে রক্ষা পেতে গাজর খাওয়ার নিয়ম:
আপনারা কৃমি থেকে রেহাই পেতে একটি গাজর কুচি করে প্রতি দিন সকালে খালি পেটে খান। গাজরের বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, সি এবং জিঙ্ক কৃমি প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলতে সাহায্য করে।
15.কৃমি রোগ থেকে রক্ষা পেতে শশার বীজ খাওয়ার নিয়ম:
কৃমির সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমাদের শরীরে শশার বীজ ভালো কাজ করে। শশার বীজ শুকিয়ে, গুঁড়ো করে রোজ ১ চামচ করে খেতে পারলে দ্রুত উপকার পেতে পারেন আপনারা কৃমি থেকে মুক্তি পেতে।
কৃমি রোগ থেকে মুক্তি পেতে ঘরোয়া ১৫টি খাবারের নিয়মের শেষ কথা :
উপরিউক্ত নিয়মগুলো নিয়মিত অনুসরণ করে আপনারা আপনাদের কৃমি রোগের থেকে কিছুটা রেহাই পেতে পারেন ইনশাআল্লাহ।
শিক্ষামূলক ব্লগ বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url