স্বাভাবিক জ্বর হলে ১০টি ঘরোয়া করণীয়
হ্যালো সবাইকে সুমা হেলথ কেয়ার এ স্বাগতম!আশা করছি আপনারা সবাই ভালো আছেন ইনশাআল্লাহ আজকের নতুন একটি হেলথ কেয়ার সম্পর্কিত তথ্য পেয়ে আপনারা আরও বেশি ভালো থাকবেন। আজকের হেলথ কেয়ার এর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্বাভাবিক জ্বর হলে১০টি ঘরোয়া করণীয় যে বা যারা দেখতে এসেছেন তাদের সবাইকে জানাই আসসালামু আলাইকুম।
![]() |
স্বাভাবিক জ্বর হলে ১০টি ঘরোয়া করণীয় |
শিরোনাম :স্বাভাবিক জ্বর হলে ১০টি ঘরোয়া করণীয়।
আমরা জানি, আমাদের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাএা যখন কম থেকে হঠাৎ বেড়ে যায় তখন আমাদের শরীরে জ্বর আসে।আমাদের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাএা ৯৮°সেলসিয়াস হয়ে থাকে।আর এই তাপমাত্রা যখন বেড়ে যায় তখন আমাদের শরীর গরম হয়ে যায়। তাই আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এসব স্বাভাবিক জ্বর আসলে আমরা নিজেরা এই ১০টি ঘরোয়া করণীয় কাজ করতে পারি, এতে ইনশাআল্লাহ আমাদের উপকৃত করতে পারে।
স্বাভাবিক জ্বর হলে ১০টি ঘরোয়া করণীয়:
১/গোসল ও গা মুছে দেওয়া:
জ্বর হলে কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করলে আমাদের তাপমাত্রা কমার পাশাপাশি শরীর ফ্রেশ হয়।তাই আমাদের জ্বরের সময় ২৭ থেকে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার পানি দিয়ে গোসল করা ভালো।অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করা ঠিক হবে না। এতে ত্বকের নিচে রক্তজালিকা সংকুচিত হয়ে যেতে পারে ও আপনার শরীরে কাঁপুনি শুরু হয়ে যেতে পারে। তাই আপনাদের অতিরিক্ত গরম পানি দিয়ে গোসল করাও জ্বরের সময় অনুচিত।
২/পানিপট্টি ও বরফের ব্যবহার:
জ্বরের সময় আমরা সাধারণত কপালে পানিপট্টি দিয়ে থাকি। তবে তাপমাত্রা অত্যন্ত বেড়ে গেলে এর পরিবর্তে আপনারা বগলের নিচে বা কুঁচকিতে বরফ ব্যবহার করে নিতে পারেন । কারন আমাদের এসব স্থানে রক্তনালিগুলো অপেক্ষাকৃত প্রশস্ত হয়, ফলে ঠান্ডা প্রয়োগ করলে দ্রুত শরীরের তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করতে পারে এটি। বরফের খণ্ড গামছা বা কাপড়ে পেঁচিয়ে উল্লিখিত স্থানে ১০-১৫ মিনিট কিছুক্ষণ চেপে রাখলে দ্রুত তাপমাত্রা কমে যেতে পারে।
৩/জ্বরের সময় পোশাকের ব্যবহার:
জ্বর হলে আপনারা তরল পুষ্টিকর খাবার খেতে পারেন। আমাদের এসময় বেশি খাবার একসঙ্গে খাওয়া উচিত নয়। কেননা, এটি আমাদের শরীরের তাপ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারে ও আমাদের বদহজম ঘটাতে পারে। তাই এ সময় আমাদের সুতি কাপড়ের জামা পরা দরকার, যাতে ভেতর দিয়ে বাতাস প্রবাহিত হয়। এছাড়া আমরা আমাদের দরজা-জানালা খুলে রেখে ও পাখা ছেড়ে রাখতে পারি যাতে বাতাস চলাচল করে।
৪/জ্বরের সময় তরল খাবারের ব্যবহার:
আপনারা জ্বরের সময় প্রচুর তরল পান করতে পারেন। এর কারণ হল জ্বরের কারণে তাপমাত্রা বাড়লে শরীর দ্রুত পানিশূন্যতার দিকে যেতে থাকে। তাই পর্যাপ্ত পানির সরবরাহ তখন অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়ে।এসব তরল জিনিস এসময় বেশি খাওয়া উচিত। যেমন -কুসুম গরম পানি, ফলের শরবত, ডাবের পানি, চা- যে কোনো তরল খাবারেই বাধা নেই। সর্দি-জ্বর থাকলে প্রতিদিনের লক্ষ্য হবে আট থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করা। আর বেশি তরল পান করলে শরীর থেকে জীবাণু ও অন্যান্য বিষাক্ত উপাদান বেরিয়ে যাওয়া সহজ হয়।
৫/শরীরে আরামদায়ক জিনিস মুড়িয়ে শুয়ে থাকা:
আপনারা এসময় কোনো বড় ধরনের কম্বল বা কাঁথা মুড়িয়ে আপনাদের সারা শরীর ঢেকে নিতে পারেন। এতে আপনাদের শরীরের গরম ভাবটা ঠান্ডা হয়ে আপনার শরীর ঘামতে পারে।
৬/বিশ্রাম নেওয়া:
অসুস্থ অবস্থায় আপনারা যত বেশি সক্রিয় থাকবেন ততই আপনার শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে পারে। তাই বিশ্রামে থাকলে আপনার তাপমাত্রা কমতে এবং রোগমুক্তি করতে পারে দ্রুত।
৭/তুলসি পাতার ব্যবহার:
উপরিউক্ত ধাপগুলি করা ছাড়াও আপনারা ঘরোয়া উপায়ে ঔষধ তৈরি করে নিতে পারেন। যেমন-আপনারা প্রথমে একটি বাটিতে ৮-১০টি তুলসি পাতা নিন। এবার পাতাগুলো পরিষ্কার করে ধুয়ে নিন। একটি পাত্রে পানি গরম হতে দিন। এর সঙ্গে দিয়ে দিন তুলসি পাতা। ভালোভাবে ফুটিয়ে নিন। এই পানি প্রতিদিন সকালে এককাপ করে খান। তুলসি পাতায় থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান জ্বর, সর্দি, গলা ব্যথা, ব্রংকাইটিস, ম্যালেরিয়ার মতো অনেক রোগের উপশমে সাহায্য করতে পারে । এই পাতা শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলতে সাহায্য করে।
৮/জ্বর কমাতে মধুর ব্যবহার:
উপরিউক্ত ধাপগুলি করা ছাড়াও আপনারা ঘরোয়া উপায়ে ঔষধ তৈরি করে নিতে পারেন। যেমন- এক চা চামচ মধু, অর্ধেকটা লেবুর রস ও এককাপ গরম পানি নিন। এবর সব একসঙ্গে মিশিয়ে নিন ভালো করে। এই মিশ্রণ দিনে দুইবার খান। মধুতে আছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা শরীরের ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে। এর ফলে ভাইরাসজনিত জ্বর কমানো সহজ হতে পারে । ভাইরাস জনিত রোগের ক্ষেত্রে লেবুর রস ও মধু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে কাজ করতে পারে ও শরীরের অতিরিক্ত তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
৯/জ্বর কমাতে আদার ব্যবহার:
উপরিউক্ত ধাপগুলি করা ছাড়াও আপনারা ঘরোয়া উপায়ে ঔষধ তৈরি করে নিতে পারেন। যেমন-আধা চা চামচ আদা বাটা ও এক চা চামচ মধু নিন। এককাপ গরম পানিতে আদা বাটা দিয়ে ভালোভাবে ফুটিয়ে নিন। এরপর তার সঙ্গে মেশান মধু। এই মিশ্রণ দিনে তিন-চারবার পান করতে পারেন। এছাড়াও এক চা চামচ লেবুর রস, আধা চা চামচ আদার রস ও এক চা চামচ মধু মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে সেটিও দিনে তিন-চারবার খেতে পারেন। এতে জ্বর কমতে সাহায্য করতে পারে আপনার।কারণ আদা হলো প্রাকৃতিক অ্যান্টি ভাইরাস যা আপনার শরীরের তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
১০/জ্বর কমাতে রসুনের ব্যবহার:
উপরিউক্ত ধাপগুলি করা ছাড়াও আপনারা ঘরোয়া উপায়ে ঔষধ তৈরি করে নিতে পারেন। যেমন- এককোয়া রসুন ও এককাপ গরম পানি নিন। রসুন কুচি করে নিয়ে গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন দশ মিনিট। এরপর রসুনের কুচিগুলো ছেঁকে নিয়ে পানিটুকু চায়ের মতো খেয়ে নিন। এভাবে দিনে দুইবার খেতে হবে। এছাড়াও রসুন ছেঁচে নিয়ে তার সঙ্গে অলিভ অয়েল মিশিয়ে মিশ্রণটি পায়ের তালুতে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। এরপর পাতলা কোনো কাপড়ে পা পেঁচিয়ে রাখুন সারারাত। সকালে উঠে দেখবেন জ্বর আপনার অনেকটা সেরে যেতে পারে। তবে গর্ভবতী বা শিশুর ক্ষেত্রে এটি করা যাবে না।
স্বাভাবিক জ্বর হলে ১০টি ঘরোয়া করণীয় এর শেষ কথা :
উপরিউক্ত ধাপগুলি আপনারা আপনাদের স্বাভাবিক জ্বর হলে অনুসরন করতে পারেন ইনশাআল্লাহ ভালো ফলাফল পেতে পারেন।
শিক্ষামূলক ব্লগ বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url