মরনঘাতি ক্যান্সার রোগের ১৫ টি সাধারণ লক্ষণ



হ্যালো সবাইকে সুমা হেলথ কেয়ার এ স্বাগতম!আশা করছি আপনারা সবাই ভালো আছেন ইনশাআল্লাহ আজকের এই নতুন মরণঘাতী ক্যান্সার সম্পর্কিত তথ্য পেয়ে আপনারা আরও বেশি ভালো থাকবেন। আজকের এই স্পেশাল হেলথ কেয়ার এর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মরণঘাতী ক্যান্সার রোগের ১৫টি লক্ষন যে বা যারা দেখতে এসেছেন তাদের সবাইকে জানাই আসসালামু আলাইকুম।

মরনঘাতি ক্যান্সার রোগের ১৫ টি সাধারণ লক্ষণ

শিরোনাম :মরনঘাতি ক্যান্সার রোগের ১৫ টি সাধারণ লক্ষণ।



ক্যান্সার রোগটিকে সাধারণত মরণঘাতী রোগ বলে ডাকা হয়ে থাকে।আমাদের মতো মানুষকে যে রোগগুলো বেশি ভোগায়, তার মধ্যে ক্যান্সার সবচেয়ে ভীতিকর। ক্যান্সার শরীরে একবার জট বা বাসা বেঁধে ফেললে রোগীকে বাঁচিয়ে ফেরানোর সম্ভাবনা কম হয়ে যায়। তখন আমাদের স্বল্প কিছু লক্ষণ খেয়াল না করলে রোগিকে বাচিয়ে রাখা একেবারে দুঃসাধ্যই হয়ে যায়। তবে আমরা যদি প্রাথমিক পর্যায়েই এই মরণব্যাধি শনাক্ত করে ফেলতে পারি, তার মানে আমাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অনেকখানিই বেড়ে যায়।সেজন্য চিকিৎসকরা আমাদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন, দুঃখ করার চেয়ে নিজেকে সুস্থ রাখাই পরম সত্যের কাজ।

অনেক সময় দেখা যায় একজন ব্যক্তি হয়তো সুস্থ জীবন যাপন করছেন, কিন্তু হঠাৎ করেই দেখা গেল যে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরে পরীক্ষা করে দেখা গেল তার ক্যান্সার হয়েছে। এর মধ্যে তার কিছু লক্ষণও হয়তো শরীরে দেখা দিয়েছিল কিন্তু সেগুলো তিনি বুঝতে পারেন নি, অথবা গুরুত্ব দেননি।পরে দেখা গেল বিলম্ব করার কারণে ক্যান্সার ইতোমধ্যে তার শরীরে অনেক বেশি ছড়িয়ে পড়েছে। তখন চিকিৎসার মাধ্যমে তাকে সারিয়ে তোলা অনেক বেশি কঠিন হয়ে পড়ে।বেশিরভাগ ক্যান্সারই চিকিৎসা যোগ্য এবং যেসব রোগীরা খুব মারাত্মক পর্যায়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আগে চিকিৎসা করানোর সুযোগ পান তারা একটি ভাল ফলও পান।তাই দেখা যায় বেশিরভাগ সময় আমরা ছোট-খাট উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যেতে চাইনা বা সেগুলোকে পর্যাপ্ত গুরুত্ব দেই না। এসব উপসর্গকে আমরা এড়িয়ে চলি যা আসলে প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

তাই আজ আমি আপনাদের সাথে মরনঘাতি ক্যান্সারের এরকমই ১৫টি সাধারণ লক্ষণ শেয়ার করবো ইনশাআল্লাহ আপনারা সবাই কিছুটা হলেও উপকৃত হতে পারেন।

মরনঘাতী ক্যান্সার রোগের ১৫টি লক্ষণ হলো-



১. দীর্ঘ দিন ক্লান্তিভাব লাগা:

আপনি যদি দীর্ঘ সময় ধরে ক্লান্তিবোধ করেন অথবা অবসাদে ভোগেন তবে সেটা অনেক রোগেরই কারণ হতে পারে, তবে আপনার মাথায় রাখা ভালো যে ক্যান্সারও হতে পারে। মলাশয়ের ক্যান্সার বা রক্তে ক্যান্সার হলে সাধারণত এমন উপসর্গ দেখা যায়।তাই, আপনি যদি স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশি ক্লান্তিবোধ করেন অথবা দীর্ঘসময় ধরে ক্লান্ত থাকেন, তাহলে আপনি চিকিৎসাসেবা নিতে পারেন ও পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে পারেন ।


২. অকারনে ওজন হ্রাস পাওয়া:

আপনার কোনো কারণ ছাড়া হঠাৎ করেই দ্রুতগতিতে যদি ওজন হারাতে থাকেন, তবে তা সহজভাবে মনে ধারন নিবেন না।অনেক ক্যান্সারই সাধারণত হুট করে আপনার ওজন কমিয়ে ফেলতে পারে। তাই শরীরের ওজনের দিকে খেয়াল রাখতে হবে সবসময়।


৩. দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা অনুভব হওয়া:

আপনার হঠাৎ করে কোনো কারণ ছাড়া যদি আপনি দীর্ঘদিন ধরে শরীরের কোনো স্থানে ব্যথায় ভোগেন, তবে তাতে ওষুধও কাজ না করলে এই বিষয়টি নিয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।যেমন:জখম-আঘাত, ঘা ইত্যাদি।অথবা আপনার কোন জায়গায় ব্যথা করছে তার ওপর নির্ভর করছে রোগী ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত নাকি ডিম্বাশয়, পায়ুপথ বা মলাশয়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত।


৪. অস্বাভাবিক মাংসপিণ্ড বা কোথাও শক্ত মাংসপিণ্ড হওয়া:



আপনি যদি শরীরের কোনো অংশে অস্বাভাবিক কোনো মাংসপিণ্ড দেখতে পান অথবা মাংস জমাট হতে দেখেন কিংবা এ ধরনের পরিবর্তন বুঝতে পারেন, তবে এটা নিয়ে অবশ্যই আপনারা ভেবে একজন বিশেষগ্গের পরামর্শ নিবেন বা পরীক্ষা নিরীক্ষা করবেন।


৫. ঘন ঘন জ্বর হওয়া:



সাধারনত আপনার শরীরে ক্যান্সার বেকে বসলে আপনার শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। এতে ঘন ঘন জ্বর দেখা দেয়।কষ্টের ব্যাপার হলো, কিছু ক্যান্সারের শেষ পর্যায়েরই উপসর্গ ঘন ঘন জ্বর। তবে ব্ল্যাড ক্যান্সারসহ এ ধরনের কিছু ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায়েই ঘন ঘন জ্বর দেখা দেয় আপনাদের শরীরে।


৬. ত্বকে পরিবর্তন আসা:



অনেকেই ত্বকের ক্যান্সারের ব্যাপারে সচেতন নন। ত্বকে অস্বাভাবিক পরিবর্তনই এমন ক্যান্সার শনাক্ত করার সহজ উপায়। তাই ত্বকে অতিরিক্ত তিল বা ফ্রিকেল অথবা আঁচিলের দিকে খেয়াল করুন। যদি এগুলোর রং ও আকারে অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা যায়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। আপনাদের ত্বক লালচে হয়ে যাওয়া, ফস্কুড়ি পড়ে যাওয়া এবং রক্তক্ষরণও অন্যান্য ক্যান্সারের উপসর্গ।


৭. দীর্ঘস্থায়ী কাঁশি দেখা দেওয়া :



আপনি যদি দেখেন যে ওষুধ সেবনের পরও কাশি সেরে উঠতেছেই না, তবে শীতকালীন কাশির চেয়েও এটা বেশি কিছু ধরে নিতে হবে। আর এই কাশির কারণে যদি আপনার বুক, পিঠ বা কাঁধে ব্যথা করে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।


৮. মল-মূত্রত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন আসা:



যদি আপনাকে মল বা মূত্রত্যাগের জন্য ঘন ঘন শৌচাগারে যেতে হয়, তবে এখানে ক্যান্সার নিয়ে ভাবনার কারণ আছে।ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যও মলাশয়ের ক্যান্সারের লক্ষণ। মূত্রত্যাগের সময় আপনাদের অন্ত্রে ব্যথা বা রক্তক্ষরণ মূত্রথলির ক্যান্সারের উপসর্গ।


৯. অকারণে রক্তক্ষরণ হওয়া:



যদি কাশির সময় আপনার রক্তক্ষরণ হয়, তবে এটা ক্যান্সারের বড় লক্ষণ। এছাড়া স্ত্রী অঙ্গ বা মলদ্বার থেকে রক্তক্ষরণসহ এ ধরনের অন্যান্য অস্বাভাবিকতাও আপনার ক্যান্সারের উপসর্গ হতে পারে।


১০. খাবার গ্রহণে সমস্যা দেখা দেওয়া :



কেউ খাবার খেলেই যদি নিয়মিত বদহজমে ভোগেন, তবে পেট, কণ্ঠনালী বা গলার ক্যান্সার নিয়ে ভাবনার কারণ আছে।তাই এরকম কোনো সমস্যা হলেই ডাক্তারের দ্বারা পরীক্ষা করিয়ে নিতে পারেন। কারন অসুস্থতাকে কখনো এড়িয়ে যেতে নেই।


১১/ অতিরিক্ত ক্লান্তি ভাব আসা:



এখানে ক্লান্তি বলতে বোঝায় আপনাদের চরম ক্লান্তিভাব যা বিশ্রাম নেয়ার পরও দূর হয় না। ক্যান্সার বাড়ার সাথে সাথে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপসর্গ হিসেবে দেখা দিতে পারে কিছু কিছু ক্যান্সারের ক্ষেএে।যেমন- লিউকেমিয়ার ক্ষেত্রে শুরুর দিকেই ক্লান্তি দেখা দিতে পারে।


১২/ যে ধরনের ক্ষতের কারনে ক্যান্সার হতে পারে :


অনেকেই জানেন যে দেহে যদি কোন ধরনের একটি গুটার মতো থাকে যেটি বাড়ে বা ব্যথা হয় বা সেটি থেকে রক্তপাত হয় তাহলে সেটি ত্বকের ক্যান্সারের একটি লক্ষণ হতে পারে। কিন্তু শরীরে যদি কোন ক্ষত থাকে যেটি চার সপ্তাহের পরও ভাল হয় না বা সেরে যায় না, এমন ক্ষতের প্রতিও আমাদের লক্ষ্য রাখা উচিত এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে পরীক্ষা করা উচিত। মুখে যদি আপনার এমন কোন ক্ষত হয় তাহলে সেটি মুখের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।তাই এমন অবস্থায় আপনাদেরকে একজন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর পরামর্শ নেয়া উচিত।


১৩/মলের সাথে রক্তপাত হওয়া:



হঠাৎ যদি আপনাদের মলের সাথে রক্তপাত হয় তাহলে এটি মলাশয় বা মলদ্বারে ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।আপনাদের এনডোমেট্রিয়াম বা জরায়ুর আবরণে সার্ভিক্যাল ক্যান্সারের কারণে যোনিপথে অস্বাভাবিক রক্তপাত হতে পারে।
এছাড়া আপনাদের মূত্রের সাথে রক্ত পড়লে সেটি মূত্রাশয় বা কিডনি ক্যান্সারের কারণে হতে পারে। স্তনবৃন্ত বা স্তনের বোটা থেকে রক্ত-মিশ্রিত তরল বের হলে সেটি স্তন ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে আপনাদের।


১৪/গিলতে অসুবিধা হওয়া:



আপনাদের যদি কারও ক্রমাগত বদহজম বা কোন কিছু গিলতে গেলে সমস্যা হলে সেটা ইসোফ্যাগাস, পাকস্থলী বা গলার ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।


১৫/ কণ্ঠস্বরে পরিবর্তন হওয়া:



হঠাৎ আপনাদের কণ্ঠস্বরে পরিবর্তন আসলে তা স্বরযন্ত্র বা থাইরয়েড গ্রন্থিতে ক্যান্সারের উপস্থিতি নির্দেশ করতে পারে।


মরনঘাতী ক্যান্সার রোগের ১৫টি লক্ষণের শেষ কথা :

উপরিউক্ত নিয়মগুলো অনুসরণ করে আপনারা ইনশাআল্লাহ ক্যান্সার রোগের সাধারণ লক্ষণগুলো শনাক্ত করতে পারেন এবং সময়মতো একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করিয়ে কাজ করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

শিক্ষামূলক ব্লগ বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url